অগড়হতি(Agarhati), দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Parganas) – ৬৬ কিমি কলকাতা(Near Kolkata) হইতে :

রোজই বাড়ি থেকে অফিস আর অফিস থেকে বাড়ি ,মাঝে মধ্যে বন্ধুদের সাথে আড্ডা । এই সবকিছুই যখন একঘেয়ে হয়ে ওঠে তখন মনে হয় যদি হঠাৎ করে কাছে পিঠে কোনো নির্জন যায়গা থেকে ঘুরে আসা যায়, তাহলে শরীর ও মন  দুটোই বেশ তরতাজা হয়ে যায়। এমনই একটি মনোরম স্থান হল, অগড়হতি । যার দুরত্ব কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার। এখানে আপনি খুব সহজেই পরিবারের সাথে নিশ্চিন্তে কিছুদিন ছুটি কাটাতে পারবেন। এছাড়াও এখানে মাছধরা ,নৌবিহার প্রয়োজনে রোদ পোহানোরও সুবন্দোবস্ত রয়েছে। এখানকার সবুজে ঘেরা বিশাল প্রাঙ্গনে ছোট ছেলেমেয়েরাও আনন্দে খেলাধুলা করতে পারে। তাই আর দেরি না করে আজই ঘুরে আসুন অগড়হতি থেকে।

অগড়হতির দর্শনীয় স্থানগুলি:

কলকাতা থেকে অগড়হতি মাত্র দুই ঘন্টার পথ । এটি একটি প্রকৃতই নিরিবিলি স্থান ,তবে এই স্থানে যেসব রিসর্টগুলি গড়ে উঠেছে তার বেশিরভাগই হ্রদের কাছাকাছি ,যার ফলে আপনি হ্রদ থেকে আগত হালকা ঠান্ডা বাতাসের আনন্দও অনায়াসে উপভোগ করতে পারবেন। এখানকার দিগন্ত বিস্তৃত জলাশয় যা কোথাও গিয়ে আকাশের সাথে মিলিত হয়, তা খুব সহজেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এখানে রিসর্টের সীমানার মধ্যেই একটি ছোট দ্বীপ রয়েছে সেখানে যাওয়ার জন্য একটি ছোট সাঁকো পার হতে হয়। এই দ্বীপে গেলে সেখানে কিছুক্ষন বসে আপনি সেই দ্বীপের চারদিকে থাকা জলের নানা দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।

অগড়হতির নিকটবর্তী আকর্ষণ:

অগড়হতি থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে মালাঞ্চা –পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে যেসব বৃহত্তম মাছের বাজারগুলি রয়েছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। এই মালাঞ্চার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে বিদ্যাধরী নদী। এই নদীর সঙ্গম স্থলের উপর দিয়ে আপনি অস্তগামী সূর্য দেখতে পাবেন, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোন তুলনাই চলে না । এই নদী তীরবর্তী অঞ্চলে থাকা কিছু ইঁটভাটার চিমনিও দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও এই নদী দিয়ে যেসব ফেরিগুলি চলাচল করছে ,তা দেখতে দেখতেও বেশ কিছুটা সময় কাটানো যায়।

অগড়হতিতে যা করতে হবে:

অগড়হতিতে সর্বোত্তম কাজ হ’ল কিছুই না করা – কেবল গাজেবোতে বসে নীল আকাশ জুড়ে মেঘ ভাসতে দেখা। আপনি এখানে আরও কয়েকটি জিনিস করতে পারেন তা হ’ল মাছ ধরা, নৌকা বাইকরা এবং পার্কে আপনার পরিবারের সাথে কিছু মানসম্পন্ন সময় কাটানো। আপনি দ্বীপের ঘন সবুজ ঘাসে ল্যাপিং হ্রদের জলের ঘুমপাড়ানি গান সহ একটি ঘুমও নিতে পারেন। অগড়হতিতে, আপনি আপনার কর্মজীবনের চাপ হত্যা করতে পারেন এবং আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের কাছাকাছি আসতে পারেন।

অগড়হতিতে লোকজন যায় কিছুই না করতে – সেখানে গিয়ে সবাই শুধুই আনন্দ করে হইহল্লা করে সময় কাটায়। এখানে আপনি শুধুই গাজেবোতে বসে নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের আনাগোনা দেখতে পাবেন। তবে শুধু অবসর সময় কাটানো ছাড়াও আপনি এখানে বসে নিশ্চিন্তে মাছ ধরতে বা নৌকা বাইচ করতে পারবেন । এমনকি এখানকার পার্কে বসে আপনি নিজের পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে পারেন। এখানকার সবুজে মোড়ানো প্রান্তরে আপনি চাইলে একটা ছোট ঘুমও দিয়ে দিতে পারেন যা আপনাকে রোজকার একঘেয়ে জীবনের স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে পারে ।

অগড়হতি দেখার সেরা সময়:

আপনি বছরের যে কোনও সময় অগড়হতি যেতে পারেন। শীতকাল রোদে বাস্কিং করার জন্য সর্বোত্তম যখন বর্ষাদিগন্তের উপর গড়িয়ে পড়া ঘন সবুজ এবং কালো মেঘের জন্য সর্বোত্তম।

কিভাবে অগড়হতি পৌঁছাবেন:

আপনি যদি গাড়িতে যান, তাহলে আপনাকে সায়েন্স সিটি থেকে বাসন্তী হাইওয়ে নিয়ে অগড়হতি পৌঁছানোর জন্য মালাঞ্চা পার হতে হবে। কলকাতা থেকে ধামাখালির সংযোগকারী সমস্ত বাস আপনাকে অগড়হতি নিয়ে যাবে।

অগড়হতিতে থাকা এবং খাবার ব্যবস্থা :

বর্তমানে, রিসর্টে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ রয়েছে। সমস্ত কক্ষ বড় আরামদায়ক বিছানা, ওয়ার্ডরোব, সংযুক্ত পশ্চিমা বাথরুম, মিনি ফ্রিজ, গরম জল গিজার, কেবল সংযোগ সঙ্গে এলইডি টেলিভিশন, ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য সুবিধা যে আপনার জীবন আরামদায়ক করে তোলে দিয়ে সজ্জিত করা হয়. একটি ডাইনিং হলও রয়েছে যেখানে কিছু দুর্দান্ত খাবার পরিবেশন করা হয়। রিসর্টটি ম্যানিকিউর করা লন, একটি বাচ্চাদের পার্ক, আপনার সন্ধ্যার গসিপের জন্য কয়েকটি ছাউনিযুক্ত গ্যাজেবো, তিনটি বড় মাছ ধরার হ্রদ এবং জল জগতের মধ্যে একটি দ্বীপ দিয়ে সুবিধাজনক।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.